মেসওয়াক করার ফজিলত ও মেসওয়াক করার নিয়ম

মেসওয়াক করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ এবং ইসলামিক জীবনযাপনের একটি অংশ। এটি শুধুমাত্র দাঁতের ও মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষার মাধ্যম নয়, বরং এটি আধ্যাত্মিক ও শারীরিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার একটি চমৎকার উপায়।


মেসওয়াক রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় একটি আমল। এটি পালন করা সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত এবং ইসলামী সংস্কৃতির অংশ। নামাজ, কুরআন তিলাওয়াতের আগে মেসওয়াক করলে ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত বৃদ্ধি পায়। এটি সহজলভ্য, সাশ্রয়ী এবং বহনযোগ্য, যা যেকোনো সময় ও যেকোনো স্থানে ব্যবহার করা যায়।

মেসওয়াক কী ?

মেসওয়াক (মিসওয়াক বা সিওয়াক নামেও পরিচিত) হলো একটি প্রাকৃতিক দাঁত পরিষ্কারক যা আরাক গাছ (Salvadora persica) বা অন্যান্য গাছের শাখা বা মূল দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি প্রাচীনকাল থেকে ইসলামী সংস্কৃতিতে দাঁত ও মুখগহ্বর পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

মেসওয়াক ইসলামী সংস্কৃতিতে সুন্নাহ হিসেবেও বিবেচিত, এবং নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়।

মেসওয়াক কিভাবে করতে হয় ? | মেসওয়াক করার নিয়ম

মেসওয়াক সঠিকভাবে করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

১. মেসওয়াকের প্রস্তুতি:

  • একটি তাজা মেসওয়াক বা মিসওয়াক নিন।
  • মেসওয়াকের এক প্রান্ত থেকে প্রায় এক ইঞ্চি অংশের খোসা ছুলে ফেলুন।
  • ছুলে ফেলা অংশটি কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন যাতে এটি নরম হয়।
  • নরম হয়ে গেলে, সেই অংশটিকে দাঁতের ব্রাশের মতো আকারে ফাঁক করুন।

২. মেসওয়াক করা:

  • মেসওয়াকের নরম অংশটি দাঁত ও মাড়িতে আলতোভাবে ঘষুন।
  • নিম্নলিখিত উপায়ে দাঁতগুলো পরিষ্কার করুন:
    • উপরে থেকে নিচে: উপর দিকে থাকা দাঁতগুলোতে উপরে থেকে নিচে ঘষুন।
    • নিচ থেকে উপরে: নিচে থাকা দাঁতগুলোতে নিচ থেকে উপরে ঘষুন।
    • আড়াআড়ি ঘষুন: দাঁতের সামনের এবং পেছনের অংশে আলতোভাবে আড়াআড়ি ঘষুন।
  • প্রতিটি দাঁতের পৃষ্ঠে, মাড়িতে এবং জিভেও মেসওয়াকের মাথাটি ঘষে পরিষ্কার করুন।
  • প্রতিবার মেসওয়াকের মাথাটি পরিষ্কার করে নিন, যাতে জমে থাকা খাদ্যকণা বা ময়লা সরানো যায়।

৩. মেসওয়াকের পর:

  • ব্যবহারের পর মেসওয়াকটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করুন।
  • মেসওয়াকের নরম অংশটি নিয়মিত ছুলে নিন, যাতে তা কার্যকর থাকে।
  • মেসওয়াকের মাথাটি নষ্ট বা শক্ত হয়ে গেলে নতুন করে ছুলে নিন।

৪. মেসওয়াক করার সময়:

  • সাধারণত নামাজের আগে, খাবারের আগে এবং ঘুমানোর আগে মেসওয়াক করা ভালো।
  • দিনে কয়েকবার মেসওয়াক করা সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত এবং এটি দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

মেসওয়াক করার সময় আলতোভাবে ঘষতে হবে যাতে দাঁত বা মাড়িতে আঘাত না লাগে। নিয়মিত মেসওয়াকের অভ্যাস দাঁতের স্বাস্থ্য এবং মাড়ির সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

মেসওয়াক করার উপকারিতা

মেসওয়াক ব্যবহারের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শুধুমাত্র মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষা করে না, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও ইসলামী সুন্নাহর অংশ হিসেবেও বিবেচিত। নিচে মেসওয়াক করার প্রধান কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলো:

১. দাঁতের পরিষ্কার ও সুস্থতা:

  • মেসওয়াক দাঁত থেকে প্লাক ও খাদ্যকণা সরিয়ে দাঁতকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
  • এটি দাঁতের ক্ষয় ও ক্যাভিটি রোধ করতে কার্যকর।

২. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাব:

  • মেসওয়াকের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে এবং মুখগহ্বরের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে সহায়ক।
  • এটি দাঁতের ফাঁকে জীবাণু তৈরি হতে বাধা দেয়, যা মাড়ির রোগ (জিনজিভাইটিস) প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৩. মাড়ির স্বাস্থ্য:

  • মেসওয়াক ব্যবহারের মাধ্যমে মাড়ির রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা মাড়ির রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
  • এটি মাড়ির রক্তপাত, ফোলাভাব ও অন্যান্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

৪. মুখের দুর্গন্ধ দূরীকরণ:

  • মেসওয়াক মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এবং মুখকে সতেজ রাখে।
  • এতে থাকা প্রাকৃতিক তেল মুখের দুর্গন্ধ তৈরি হওয়া ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে।

৫. প্রাকৃতিক ও নিরাপদ:

  • মেসওয়াক সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, তাই এতে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নেই।
  • এটি পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর একটি দাঁত পরিষ্কারের উপায়।

৬. দাঁতের এনামেল রক্ষা:

  • মেসওয়াকের নরম আঁশ দাঁতের এনামেলকে রক্ষা করে এবং দাঁতের ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা করে।
  • নিয়মিত মেসওয়াক ব্যবহারে দাঁত মজবুত ও সাদা থাকে।

৭. সহজলভ্য ও বহনযোগ্য:

  • মেসওয়াক সহজেই বহনযোগ্য এবং ব্যবহার করা যায়, যা ভ্রমণের সময়ও দাঁতের যত্ন নিতে সহায়ক।

৮. মানসিক প্রশান্তি ও ইসলামী সুন্নাহ:

  • মেসওয়াক ইসলামের সুন্নাহ অনুযায়ী একটি প্রশংসনীয় আমল।
  • এটি মানসিক প্রশান্তি দেয় এবং সুন্নাহ পালনের আনন্দ লাভ করা যায়।

৯. অর্থনৈতিক উপকারীতা:

  • মেসওয়াক সাশ্রয়ী এবং এর জন্য অতিরিক্ত কোনো খরচের প্রয়োজন হয় না।
  • এটি বারবার ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য কার্যকর থাকে।

মেসওয়াকের নিয়মিত ব্যবহার দাঁতের এবং মাড়ির সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক। এটি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ দাঁতের যত্নের একটি চমৎকার উপায়।

রমজান মাসে মেসওয়াক করার ফজিলত

রমজান মাসে মেসওয়াক করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। ইসলামী শরীয়তে রমজান মাসে মেসওয়াকের গুরুত্ব আরও বেশি, কারণ এটি শুধু দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষার মাধ্যম নয়, বরং এটি একটি সুন্নাহ আমল। মেসওয়াক করার বিশেষ কিছু ফজিলত নিচে তুলে ধরা হলো:

১. রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ:

  • মেসওয়াক করা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় একটি আমল। তিনি সবসময় মেসওয়াক করতেন এবং সাহাবিদেরও তা করার তাগিদ দিতেন।
  • রমজান মাসে বিশেষত রোজা রাখার সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত মেসওয়াক করতেন, যা একটি প্রিয় সুন্নাহর উদাহরণ।

২. রোজার সময় মুখের দুর্গন্ধ দূর করা:

  • রোজা রাখার সময় দীর্ঘ সময় পানাহার না করার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। মেসওয়াক ব্যবহারে এই দুর্গন্ধ দূর হয় এবং মুখ সতেজ থাকে।
  • রাসূল (সা.) বলেছেন, "রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের চেয়েও উত্তম।" (বুখারি, মুসলিম) তবে মেসওয়াক করা এই গন্ধের কারণে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না বরং তা মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৩. রোজার কোনো ক্ষতি হয় না:

  • রমজান মাসে রোজা অবস্থায় মেসওয়াক করার অনুমতি রয়েছে এবং এটি রোজার কোনো ক্ষতি করে না।
  • মেসওয়াক করার ফলে মুখে বা গলায় কিছু যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে, তাই রোজা অবস্থায় এটি করা নিরাপদ এবং বৈধ।

৪. ইবাদতের ফজিলত বৃদ্ধি:

  • মেসওয়াক করলে নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদত করার সময় মুখ পরিষ্কার ও সতেজ থাকে, যা ইবাদতের ফজিলত বৃদ্ধি করে।
  • এটি আল্লাহর কাছে পরিপাটি ও পরিচ্ছন্নভাবে ইবাদত করতে সাহায্য করে, যা আল্লাহর কাছে প্রিয়।

৫. নামাজের জন্য প্রস্তুতি:

  • রমজানে নিয়মিত মেসওয়াক করা নামাজের জন্য একটি সুন্দর প্রস্তুতি। বিশেষত তারাবিহ ও অন্যান্য নফল নামাজের আগে মেসওয়াক করা সুন্নাহ এবং তা ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত বৃদ্ধি করে।

৬. পুণ্যের দ্বিগুণ ফজিলত:

  • রমজান মাসে যে কোনো নেক আমল করার ফজিলত অনেক বেশি। মেসওয়াক করা যেহেতু একটি সুন্নাহ আমল, তাই এই মাসে মেসওয়াক করলে দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যায়।

এগুলো ছাড়াও মেসওয়াকের নিয়মিত ব্যবহার মুখের স্বাস্থ্য বজায় রাখে, যা রোজার সময় বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। তাই রমজান মাসে মেসওয়াক করা বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়।

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মেসওয়াক করা সম্পর্কে কি বলেছেন

হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মেসওয়াক করা সম্পর্কে অনেক হাদিসে উৎসাহিত করেছেন। তিনি মেসওয়াককে মুখ পরিষ্কার রাখার এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নিচে মেসওয়াক করার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কিছু হাদিস তুলে ধরা হলো:

১. সুন্নাহর অংশ:

  • হযরত আয়েশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “মেসওয়াক মুখ পরিষ্কারের এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উপায়।” — (সহীহ বুখারি, হাদিস: ৮৮৮)

২. নামাজের আগে মেসওয়াক:

  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর না হতো, তবে আমি তাদেরকে প্রত্যেক নামাজের আগে মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।” — (সহীহ বুখারি, হাদিস: ৮৪৭; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৫২)

৩. ইবাদতের ফজিলত বৃদ্ধি:

  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “মেসওয়াকের মাধ্যমে ইবাদতের সওয়াব ৭০ গুণ বৃদ্ধি পায়।” — (বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান, ১৪৪৬)

৪. রোজার সময় মেসওয়াক:

  • আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের চেয়েও উত্তম।” — (সহীহ বুখারি, হাদিস: ১৯০৪; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১১৫১)
  • রোজা অবস্থায় মেসওয়াক করার অনুমতি সম্পর্কে আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “যদি তোমরা রোজা রাখ, তাহলে সকালে ও বিকেলে মেসওয়াক কর।” — (বুখারি, হাদিস: ৮৮৯)

৫. মৃত্যুর আগে মেসওয়াক:

  • হযরত আয়েশা (রাযি.) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর সময়ও মেসওয়াক ব্যবহার করেছিলেন। তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মৃত্যুর সময় শয্যাশায়ী ছিলেন, তখন তিনি মেসওয়াক করতে চেয়েছিলেন। আমি তার জন্য মেসওয়াক নরম করে দিলাম, এবং তিনি মেসওয়াক করে তৃপ্ত হলেন।” — (সহীহ বুখারি, হাদিস: ৮৯০)

৬. সুন্নাহর মর্যাদা:

  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “চারটি কাজ নবীদের সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত: খতনা, সুগন্ধি ব্যবহার, মেসওয়াক এবং বিয়ে।” — (তিরমিজি, হাদিস: ১০৮০)

এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, মেসওয়াক করা শুধু স্বাস্থ্যকর নয় বরং এটি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় সুন্নাহও। নিয়মিত মেসওয়াক করার মাধ্যমে আমরা সুন্নাহ পালন করতে পারি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।

কোন কোন গাছের ডাল বা শেকড় দিয়ে মেসওয়াক করা যায় ?

মেসওয়াক সাধারণত আরাক গাছ (Salvadora persica) দিয়ে করা হয়, তবে এর পাশাপাশি আরও কিছু গাছের ডাল বা শেকড় ব্যবহার করা যায়, যেগুলোর বৈশিষ্ট্য দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী। নিচে মেসওয়াক করার জন্য ব্যবহৃত কিছু গাছের তালিকা দেওয়া হলো:

১. আরাক গাছ (Salvadora persica):

  • এটি মেসওয়াকের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত গাছ এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এই গাছের ডাল ব্যবহার করতেন।
  • এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে, যা দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী।

২. নিম গাছ (Azadirachta indica):

  • নিমের ডাল দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক।
  • এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে, যা মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

৩. জাফরান গাছ (Cappairs decidua):

  • মরুভূমি অঞ্চলে মেসওয়াক করার জন্য এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়।
  • এটি দাঁত ও মাড়ির জন্য ভালো।

৪. জইতুন গাছ (Olea europaea):

  • এই গাছের ডাল বা শেকড় ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে।
  • জইতুন গাছের ডালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে।

৫. লেবু গাছ (Citrus limon):

  • লেবু গাছের ডালে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক উপাদান থাকে, যা মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
  • এতে দাঁত সাদা করার ক্ষমতাও রয়েছে।

৬. গুয়াভা গাছ (Psidium guajava):

  • গুয়াভা গাছের ডাল মেসওয়াক হিসেবে ব্যবহার করা যায়, যা মাড়ির সংক্রমণ ও রক্তপাত প্রতিরোধে সহায়ক।

৭. বাবলা গাছ (Acacia arabica):

  • বাবলা গাছের ডাল দাঁতের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং এটি মাড়ির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • এতে ট্যানিন থাকে, যা মাড়িকে শক্তিশালী করে।

৮. আলবিজিয়া গাছ (Albizia lebbeck):

  • এই গাছের ডালও মেসওয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এটি দাঁত ও মাড়ির জন্য ভালো।

৯. ক্যারোব গাছ (Ceratonia siliqua):

  • মধ্যপ্রাচ্যে এই গাছের ডাল মেসওয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এটি দাঁত পরিষ্কার রাখতে সহায়ক।

১০. বেত গাছ (Salix):

  • বেত গাছের ডালও মেসওয়াকের জন্য উপযোগী এবং দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর।

এসব গাছের ডাল বা শেকড় মেসওয়াকের জন্য উপযোগী, তবে মেসওয়াক করার সময় ডালের নরম অংশ ব্যবহার করতে হবে এবং ডালের রস বা তিতা স্বাদ মুখে না যাওয়া পর্যন্ত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

শেষ কথা:

মেসওয়াক করা শুধু একটি সুন্নাহ পালন নয়, এটি দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা একটি ভালো অভ্যাস। নিয়মিত মেসওয়াক করলে দাঁত, মাড়ি ও মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়। তাই আমাদের উচিত এই সুন্নাহকে জীবনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা এবং প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url